ব্লগিং কি,কেনো ব্লগিং শুরু করা উচিত,কিভাবে ব্লগিং করবো,ব্লগিং করে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়।আপনার মনেও যদি এই প্রশ্নগুলো থেকে থাকে,তবে সঠিক জায়গায় এসেছে।আজকে আমি এই পোস্টে আপনার এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।
ব্লগিং করে অনেকেই প্রচুর টাকা ইনকাম করছেন।আবার অনেকেই আছেন,যারা ব্লগিং শব্দটি শুনেনি অব্দি।আপনি যেহুতু এই অব্দি চলে এসেছেন এবং আমার লেখাগুলো পড়ছেন,তার মানে আপনি ব্লগিং সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।আপনি হয়তো ইন্টারনেট ঘাটতে গিয়ে ব্লগিং শব্দটির সাথে পরিচিত হয়েছেন।কিংবা অন্য কারো থেকে শুনেছেন ব্লগিং সম্পর্কে।অথবা কেউ হয়তো আপনাকে বলেছে ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করা যায়।তাই আপনি ব্লগিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গুগলে সার্চ করেছেন এবং আমার লেখাটি পেয়ে এখন পড়ছেন।
এই পোস্টে আমি ব্লগিং সম্পর্কে সকল খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করবো।যেনো আপনার সহজেই ব্লগিং সম্পর্কে ধারণা হয়ে যায়।ব্লগিং শুরু করার আগে আপনাকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হবে।নয়তো সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়।কোনো কাজে যাওয়ার আগে সেটা সম্পর্কে আমদের নূন্যতম ধারণা রাখা জরুরি।নয়তো সেই কাজটি সঠিক ভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হয় না।তাই আমাদের ব্লগিং শুরু করার আগে ব্লগিং কি এবং কিভাবে ব্লগিং করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা জরুরি।নয়তো,না জেনেই ব্লগিং শুরু করলে সেটা থেকে আমাদের তেমন কোনো লাভ হবে না।হবে শুধু সময় নষ্ট।
আপনিও যদি Blogging করে টাকা ইনকাম করতে চান তবে একটু সময় নিয়ে এই পোস্টটি পড়ে ফেলুন।এতে করে সহজেই আপনার ব্লগিং সম্পর্কে ধারণা হয়ে যাবে।এই পোস্টে আমি সবকিছুই তুলে ধরার চেষ্টা করবো,যা জনার জন্য আপনাকে অনেক ঘাটাঘাটি করতে হবে।যা অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।সময় মূল্যবান।তাই বেশি সময় নষ্ট না করে মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করি।
ব্লগিং কি?
যারা তাদের মনের ভাব খাতা কলমে প্রকাশ করে তাদেরকে বলা যায় লেখক না ইংরেজিতে Writter । আমরাও কিন্তু আমাদের মনে ভাব লিখে কিংবা মুখে বলে অথবা অঙ্গভঙ্গি করে প্রকাশ করতে পারি।কিন্তু যারা লেখা লেখি করতে পারি,সবাইকে কি লেখক বলা হয়?না।করা পেশা হিসেবে বা প্যাশন হিসেবে লেখালেখি করে,তাদেরকেই লেখক বলা হয়।কিন্তু একজন লেখক যদি খাতা কলমে না লিখে অনলাইনে কোনো ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে,তখন তাকে কি বলা হবে? রাইটার বা লেখক।
কিন্তু কেউ যখন অনলাইনে লেখালেখি করে,তখন তার এই কাজকে ব্লগিং বলা হয়।মনে করুন,কেউ একজন কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে কিংবা কিছু সংখ্যক মানুষকে কেন্দ্র করে কিছু লিখে সেটি তার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করলো।মানুষ তার সেই ওয়েবসাইট ভিজিট করে সেই লেখাগুলো পড়লো,লেখা সম্পর্কে তাদের নিজেদের মতামত ব্যক্ত করলো।এই সামগ্রিক প্রক্রিয়াটিকে ব্লগিং বলা হয়।যেখানে কেউ বা কারা অনলাইনে লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করছে।আপনিও চাইলে ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ব্লগার কে বা কারা?
ব্লগিং সম্পর্কে উপরে আমি আলোচনা করেছি।আপনার মনে যে ব্লগিং কি প্রশ্নটি ছিলো,আশা করি সেটির উত্তর পেয়েছেন।এখন আপনার মনে হয়তো এই প্রশ্নটি জাগ্রত হতে পারে যে, ব্লগার কে বা কারা?আপনি হয়তো অনেককেই দেখেছেন নিজেকে ব্লগার বলে।কিংবা অনেকেই কাউকে ব্লগার হিসেবে দাবি করে।আপনার যদি জানার ইচ্ছে হয়,কে বা কারা এই ব্লগার?তাদের কাজ কি?তবে এই পোস্টে আপনি সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।
Blogging কি সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে আমি আপনাদের বলেছি,কেউ অনলাইনে লেখালেখি করলে তার কাজকে ব্লগিং বলে।যারা লেখালেখি করে তাদেরকে আমরা লেখক বলি।কিন্তু যারা ব্লগিং করে বা অনলাইনে লেখালেখি করে,তাদেরকে বলা হয় ব্লগার।ব্লগারদের কাজ হলো ব্লগিং করা বা ওয়েবসাইটে লেখালেখি করা।
আপনিও যদি আজ একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে তাতে লেখালেখি করেন তবে মানুষ আপনাকেও একজন ব্লগার বলবে।আপনি নিজেকে একজন ব্লগার হিসেবে দাবি করতে পারবেন।আর একজন ব্লগার হিসেবে আপনি ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ব্লগিং এর ইতিহাস
ব্লগিং কি এবং ব্লগার কে বা কারা সম্পর্কে আশা করি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।কিন্তু আপনার মনে কি এই প্রশ্নটি একবারও জেগে উঠেছে যে, ব্লগিং এর ইতিহাস কি? কোথা থেকে এই ব্লগিং শব্দটির উৎপত্তি?কে আবিষ্কার করলো এই ব্লগিং শব্দটি?
আপনি যেহুতু নতুন এই ব্লগিং সেক্টরে,তাই আপনার এটি জানা নাও থাকতে পারে।নিচে আমি ব্লগিং এর ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।যেনো আপনি সহজেই ব্লগিং এর ইতিহাস সম্পর্কে সুষ্ঠু ধারণা পেয়ে যান।ব্লগিং শুরু করবেন আর এর ইতিহাস না জানলে কি আর চলে?
ব্লগিং শব্দটি কিন্তু কোনো বাংলা শব্দ নয়।ব্লগিং হলো একটি ইংরেজি শব্দ – Blogging । Blog শব্দটির সরাসরি উৎপত্তি হয়নি।এই শব্দটি এসছে Weblog শব্দ থেকে। জোম বার্গার নামক একজন মার্কিন নাগরিক ১৭ই ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে এই Weblog শব্দটির উৎপত্তি করেছিলেন।১৯৯৯ সালে পিটার মহোলজ নামক এক ব্যক্তি এই শব্দটিকে ভেঙে We এবং Blog করেন।সময়ের সাথে সাথে এটি আরো সংক্ষিপ্ত হয়ে এখন Blog এ রূপান্তর হয়েছে।
সর্বপ্রাচীন ব্লগারের নাম হলো জাস্টিন।তিনি ১৯৯৮ সালে সর্বপ্রথম ব্লগিং শুরু করেন।তার হাত ধরেই আজকের ব্লগারদের উৎপত্তি।
ব্লগিং এর প্রকারভেদ
ব্লগিং এর শুরুর দিকে সবাই এটিকে অনলাইন ভিত্তিক ডায়েরি বা নোটবুক হিসেবে ব্যবহার করতো।যেখানে নিজেদের ইচ্ছেমত লেখালেখি করা হতো।কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সবকিছু পরিবর্তন হয়।সেই সময়ের সেই অনলাইনে ডায়েরি আজ একেকজন একেক ভাবে একেক কাজে ব্যবহার করছেন।কেউ বা নিজের ব্যক্তিগত ব্লগ বানাচ্ছেন আবার কেউ তার প্রতিষ্ঠান এর জন্য ব্লগ বানাচ্ছেন।একেকজনের উদ্দেশ্য একেক রকম।তবে সবাই ব্লগিং করছেন।
তাই যদি প্রকারভেদ সম্পর্কে বলি,তবে ব্লগিংকে কয়েকটি ভাগ্যে ভাগ করা যায়।নিচে আমি ব্লগিং এর প্রকারভেদগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ব্যক্তিগত ব্লগ ( Personal Blog)
যখন কোনো ব্যক্তি তার নিজের প্রয়োজন বা ইচ্ছেতে ব্লগিং করে তখন তাকে ব্যক্তিগত ব্লগ বা Personal Blog বলে।এখন আপনি যদি চান একটি ওয়েবসাইট খুলে ব্লগিং শুরু করতে তবে আপনার সেই ওয়েবসাইটকে Personal blog বলা হবে।আর আপনার কাজকে বলা হবে ব্যক্তিগত ব্লগিং।
ব্লগিং এর শুরুর দিকে সবাই কিন্তু ব্যক্তিগত ব্লগ ব্যবহার করতো।নিজেদের প্রয়োজন বা ইচ্ছেতে ব্লগিং করতো।তবে এখন প্রয়োজন কিংবা অর্থ কামানোর জন্য মানুষ ব্লগিং করলেও ব্যক্তিগত ব্লগ কিন্তু রয়ে গেছে।
সামাজিক ব্লগ
যখন সমাজের নানান দিক নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করে কেউ ব্লগিং করে তখন তার ব্লগকে সামাজিক ব্লগ বলা হয়।এসব ব্লগে নিত্যনতুন ঘটে যাওয়া সকল বিষয় নিয়ে লেখালেখি করে থাকে।অনেকেই এসব ব্লগ থেকে সহজেই দেশের সকল খবরাখবর নিমিষেই জানতে পারে।রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক সকল বিষয়েই লেখকরা তাদের মতামত প্রকাশ করেন সামাজিক ব্লগের সাহায্যে।
প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ
আপনি হয়তো লক্ষ করে থাকবেন,গুগল,আমাজন,ফেসবুক,আলিবাবা সব বড় বড় প্রতিষ্ঠান এর আলাদা ব্লগ রয়েছে।যেখানে তারা তাদের কাস্টমার দের লক্ষ করে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে থাকে।তাদের লক্ষ্য থাকে মূলত তাদের পণ্যের ভোক্তাদের প্রতি।
তাদের ব্লগের মাধ্যমে নতুন সব পন্য সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকে ।গুগল এবং মাইক্রোসফট তাদের ব্লগে সকল পণ্যের আপডেট দিয়ে থাকে।
বিনোদনমূলক ব্লগ
এই ব্লগের কেন্দ্রে থাকে বিনোদন।বিনোদন নিয়ে যত ধরনের খবর,আলোচনা,সমালোচনা নিয়ে ব্লগিং করা হয়।মনে করুন কোনো নতুন সিনেমা আসছে সেটি নিয়ে আলোচনা করা হলে সেটা বিনোদনমূলক ব্লগের মাঝে পড়ে।তাছাড়া অনেকেই যেকোনো সিনেমা দেখে তাদের মতামত প্রকাশ কর।এই ধরনের ব্লগগুলোকে বিনোদনমূলক ব্লগ বলা হয়।
এছাড়া বিনোদন জগতের অন্যান্য খবরাখবর প্রকাশ করা হয় এই ব্লগগুলোতে।যেমন : কোনো অভিনেতা বা অভিনেত্রীর নতুন সিনেমা নিয়েও আলোচনা করা হয়।
প্রশ্নোত্তর ব্লগ
প্রশ্নোত্তর ব্লগের মূল উদ্দেশ্য হয় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেয়া।আপনি হয়তো অনেক প্রশ্নোত্তর ব্লগ দেখে থাকবেন।যেমন : Quora । এসব ব্লগে অনেকেই তাদের অজানা প্রশ্নগুলি করে থাকে,যা অন্য কেউ এসে উত্তর দিয়ে থাকে।অনেকেই এসব ব্লগে এসে থাকে তাদের অজানা কিছু জানার জন্য
বর্তমানে অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও অনেক প্রশ্নোত্তর ব্লগ তৈরি হয়েছে।এর মাঝে Bisshoy অন্যতম।এখানে অনেকেই তাদের অজানা বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করে থাকে।
খবরের ব্লগ
নাম শুনেই হয়তো বুঝে ফেলেছেন এই ব্লগটি কি সম্পর্কে তৈরি করা হয়।মূলত বিভিন্ন খবর নিয়ে নিয়ে এসব ব্লগ তৈরি করা হয়।প্রতিনিয়ত সকল ধরনের খবর যেমন : দেশের খবর,আন্তর্জাতিক খবর,খেলার খবর ইত্যাদি নিয়ে এসব ব্লগ তৈরি করা হয়।
আমাদের দেশেও এমন অনেক খবরের ব্লগ রয়েছে।যেমন : প্রথম আলো, যুগান্তর, সময় টিভি , ডেইলি স্টার, ইত্তেফাক ইত্যাদি।আপনিও যদি চান তবে খবরের ব্লগ তৈরি করতে পারেন।
ব্লগিং কেনো করবেন?
আচ্ছা,আমি যদি আপনাকে এই প্রশ্নটি করি।তবে আপনি কি উত্তর দিবেন?কেনো ব্লগিং করবেন?যেকোনো কাজের তো একটা উদ্দেশ্য থাকে।আপনি যদি ব্লগিং করতে চান,তবে আপনার নিশ্চই কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।উদ্দেশ্য ছাড়া কেউ কোনো কাজ করে না।এখন অব্দি যারা ব্লগিং সেক্টরে জড়িত আছে,তারা সবাই কোনো না কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ব্লগিং করছেন।কেউ হয়তো টাকা কামানোর জন্য ব্লগিং করছে কিংবা কেউ শখে ব্লগিং করছেন।
আপনি যদি ব্লগিং করতে চান,তবে আপনাকেও দেখতে হবে কি উদ্দেশ্যে ব্লগিং করতে চান আপনি।তাহলে সহজেই এই সেক্টরে সফলতা লাভ করতে পারবেন।এখন যারা ব্লগিং করে থাকেন,তারা প্রধানত দুইটি উদ্দেশ্যে ব্লগিং করেন।
লেখালেখি করার জন্য
অনেকের লেখালেখি করার শখ থেকে।আগের দিনে মানুষ খাতায় বা ডায়েরিতে লেখালেখি করতো।কারণ,অনেকেই লেখালেখি করতে পছন্দ করে।এখন যেহুতু প্রযুক্তির যুগ,সবকিছু ডিজিটাল হয়ে গেছে।তাই এখন অনেকেই তাদের এই লেখালেখির শখ ব্লগিং করে পূরণ করেন। আপনারও যদি লেখালেখির শখ থাকে,তবে এটাকে উদ্দেশ্য করে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।
আগেকার দিনে নিজের লেখা অন্যদের কাছে পৌঁছানোর জন্য বই লিখতে হতো। পাবলিশার এর কাছে থেকে বই তৈরি করে তা অন্যদের মাঝে পৌঁছে দেয়া হতো।কিন্তু এখন আপনার লেখা অন্যদের মাঝে পৌঁছে দেয়ার জন্য এতকিছু করতে হবে না।শুধু একটি ওয়েবসাইট খুলেই আপনি লেখালেখি শুরু করতে পারেন।
মোবাইল এবং কম্পিউটার এর যুগে এখন তেমন কেউই হার্ড কপি পড়তে চায় না।এজন্য বের হয়েছে পিডিএফ।সবাই তাদের প্রয়োজনীয় কিছু জানতে অনলাইনে সার্চ দিয়ে থাকে।আপনি অন্যদের প্রয়োজন মেটাতে পারে এমন কিছু জানলে সেটা নিয়ে লেখালেখি করলে এসইও করে আপনার লেখা অন্যদের মাঝে পৌঁছে দিতে পারেন।
ইনকাম করার উদ্দেশ্যে
লেখালেখি করার শখ বা অভ্যাস না থাকলেও আপনার যদি ব্লগিং করে ইনকাম করার উদ্দেশ্য থাকে।তবে অবশ্যই আপনাকে লেখালেখি করতে হবে।ব্লগিং করে ইনকাম করতে চাইলে আপনাকে অনেক বিষয়ে লেখালেখি করতে হবে।মানুষ যেসব বিষয় জানতে চায় সেসব বিষয়ে লেখালেখি করতে হবে।
এখন অব্দি যেসব ব্লগার আছে,তাদের প্রায় সবারই উদ্দেশ্য ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করা।আপনার যদি ইনকাম করার উদ্দেশ্য থাকে তবে আজই শুরু করে দিতে পারেন ব্লগিং।এমন অনেকেই আছে,যারা প্রথমের দিকে জানতো না যে ব্লগিং কি?কেনো ব্লগিং করা হয়?বা কিভাবে ব্লগিং করতে হয়? কিন্তু তারা আজ সফল ব্লগার।তাই আপনিও ব্লগিং শুরু করতে পারেন এবং মানুষের প্রয়োজন আছে এমন কিছু নিয়ে লেখালেখি করে ইনকাম করতে পারেন।
কীভাবে ব্লগিং শুরু করবেন?
এক্তক্ষণ যাবত যেহুতু আমার এই লেখাগুলো পড়লেন,তার মানে ধরা যায় যে আপনি ব্লগিং নিয়ে আগ্রহী।আপনি যদি ব্লগিং শুরু করতে চান এবং ব্লগার সেক্টরে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তবে আমি আপনাকে বলবো কিভাবে আপনি ব্লগিং শুরু করবেন।
ব্লগিং শুরু করা যায় যখন ইচ্ছে তখন।ব্লগিং এর দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।আপনি যদি লিখতে জানেন,তবে আপনার ব্লগিং শুরু করে দেয়া উচিত।ব্লগিং শুরু করার আগে আমাদের কিছু বিষয়ের উপরে লক্ষ্য করা উচিত।নয়তো তীরে এসে তরী ডুবানোর মতো অবস্থা হবে।ব্লগিং শুরু করার আগে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে কি নিয়ে ব্লগিং করবেন।এমন বিষয় নিয়ে ব্লগিং শুরু করা উচিত যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে।যে বিষয়ে আপনি লেখালেখি করতে পারবেন।
আপনার আগ্রহ নেই এমন বিষয়ে ব্লগিং শুরু না করাই ভালো।এখন কথা হলো,কোন মাধ্যমে ব্লগিং করবেন?ব্লগিং করার অনেক মাধ্যম আছে।আপনি এদের মাঝে জনপ্রিয় যেকোনো মাধ্যম থেকে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।জনপ্রিয় ২টি মাধ্যম নিচে তুলে ধরলাম।
- ওয়ার্ডপ্রেস
- ব্লগার
আপনি যদি ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে চান তবে উপরোক্ত যেকোনো একটি মাধ্যমে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।
কোন প্লাটফর্মে ব্লগিং শুরু করবেন?
আপনি যদি ব্লগিং এ নতুন হয়ে থাকেন তবে আপনার গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগিং শুরু করা উচিত।প্রফেশনাল ভাবে ব্লগিং করতে চাইলে ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগিং করতে পারেন।ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগিং করতে চাইলে আপনাকে আগে ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে হবে।ব্লগারে নূন্যতম ধারণা থাকলে আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারবেন।আপনার মনে যদি এই প্রশ্ন থাকতো যে, “কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্লগিং শুরু করবো?” তবে আশা করি আপনার উত্তর পেয়ে গেছেন।
নিচে আমি ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে একটু বিস্তারিত আলোচনা করবো।যেনো আপনি এই প্ল্যাটফর্ম দুটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারেন।
Google Blogger প্ল্যাটফর্ম
Blogger হলো গুগলের নিজস্ব একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম।গুগলের অন্যান্য সেবার মত এটিও ফ্রী।আপনি যদি ব্লগিং সেক্টরে বিগীনার হয়ে থাকেন,তবে গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।
নিচে আমি গুগল ব্লগারের কিছু সুবিধা তুলে ধরলাম।এগুলো থেকে সহজেই গুগল ব্লগারের সুবিধা গুলো সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন।
- আপনি চাইলে গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।এতে আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না।আপনি যদি চান তবে ডোমেইন কিনে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।নয়তো ব্লগারের সাবডোমেইন দিয়েও ব্লগিং করতে পারেন।যদি ডোমেইন কিনেন তবে বছরে আপনার খরচ হবে মাত্র ৮০০-১০০০ টাকা।
- আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একটি ব্লগ খুলতে পারবেন।এজন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না।আপনাকে হোস্টিং কিনতে হবে না।
- নতুনদের জন্য গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগিং করা অনেক সহজ।কেউ নতুন ব্লগিং শুরু করলে সহজেই তার ওয়েবসাইট কাস্টোমাইজ করতে পারবেন।তাছাড়া গুগল ব্লগার এর ইউজার ইন্টারফেস ইউজার ফ্রেন্ডলি।একজন বিগীনার সহজেই সবকিছু আয়ত্ত করতে পারবেন।
WordPress for Blog
ওয়ার্ডপ্রেস একটি থার্ড পার্টি ব্লগিং সেক্টর বা CMS। CMS মানে Content Management System । ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগিং শুরু করলে আপনাকে প্রথমে কিছু টাকা খরচ করতে হবে।আপনাকে আলাদা করে সময় এবং হোস্টিং কিনতে হবে।তাছাড়া এখানে আপনি বাড়তি কিছু ফিচার পাবেন।তাই যারা প্রফেশনাল ভাবে ব্লগিং শুরু করবেন,তাদের ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগিং শুরু করা উচিত বলে আমি মনে করি।
নিচে আমি ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে আপনাকে আরেকটু ধারণা দিবো।চাইলে দেখে নিতে পারেন।
- ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগিং করার সময় আমাদের নিজস্ব হোস্টিং ব্যবহার করতে হয়।তাই সকল তথ্যের উপর আমাদের ব্যক্তিগত ক্ষমতা থাকে।
- প্লাগিন ব্যবহার করার সুবিধা।ওয়ার্ডপ্রেসে আমরা অনেক ধরনের প্লাগিন দেখতে পাই।এই প্লাগিন গুলো ব্যবহার করে আমাদের ব্লগকে ইচ্ছেমত কাস্টোমাইজ করে নিতে পারি।এসইও কিংবা পেজ স্পীড বৃদ্ধি করতে এসব প্লাগিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- কন্টেন্ট রাইটিং কিংবা পাবলিশ উভয় ক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেস অন্যতম।ওয়ার্ডপ্রেসে অনেক সুবিধা রয়েছে , যা দিয়ে প্রফেশনাল ভাবে ব্লগিং করা সম্ভব।
ব্লগিং শুরু করতে কত টাকা খরচ করতে হবে?
আপনি যদি নতুন ব্লগিং শুরু করতে চান,তবে কোনো প্রকার অর্থ খরচ না করেও ব্লগিং করতে পারবেন।এজন্য আপনি গুগলের ব্লগার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।গুগলের ব্লগার প্লাটফর্মে ফ্রী সাবডোমেইন এবং হোস্টিং পেয়ে যাবেন।যা দিয়ে অনায়াসে ব্লগিং করা যাবে।
তবে আপনি যদি চান,প্রফেশনাল ভাবে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগিং করতে পারেন।এতে আপনাকে বাৎসরিক কিছু টাকা খরচ করতে হবে।ডোমেইন ৮০০-১০০০ টাকায় এবং হোস্টিং ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকায় পেয়ে যাবেন।তবে হোস্টিং এর দাম নির্ভর করে হোস্টিং এর স্টোরেজ এবং স্পীড এর উপর।হোস্টিং এবং ডোমেইন কিনে ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগিং করলে সকল ডাটা নিজের কাছে থাকে যা আমি একটু আগেও উপরে উল্লেখ করেছি।
কীভাবে ব্লগিং করে আয় করা যায়?
এতক্ষণ যাবত ব্লগিং কি ,কিভাবে ব্লগিং করতে হয় , কোন প্ল্যাটফর্ম দিয়ে ব্লগিং করবো এসব নিয়ে ধারণা দিয়েছি।কিন্তু আপনার যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করার তবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন অ্যাড নেটওয়ার্ক – Ad Network ব্যবহার করতে পারেন।এসব অ্যাড নেটওয়ার্ক আপনার ব্লগে অ্যাডস দেখাবে এবং সেসব থেকে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
এখন অধিকাংশ ব্লগারের প্রথম পছন্দ হলো গুগল অ্যাডসেন্স।গুগল অ্যাডসেন্স দিয়ে অনেকেই তাদের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করছেন।তাই আপনি যদি ব্লগিং করেন,ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করার জন্য গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করতে পারেন।গুগল অ্যাডসেন্স গুগলের নিজস্ব প্রোডাক্ট।তাই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়।কিন্তু অন্যান্য থার্ড পার্টি অ্যাড নেটওয়ার্কগুলো কিছুদিন পরেই তাদের ব্যবসা বন্ধ করে চলে যায়।তাই একটু কষ্ট করে হলেও গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল নিয়ে ব্লগিং করা উচিত বলে আমি মনে করি।
শুধু অ্যাডস দেখিয়ে নয়,বরং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেও ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।আপনি চাইলে নিজের পণ্য বা অন্যের পণ্য বিক্রি করেও ইনকাম করতে পারবেন।একটি ওয়েবসাইট থাকলে অনেক মাধ্যম থাকে সেটি ব্যবহার করে ইনকাম করার।
ব্লগিং কিভাবে শিখবো?
ব্লগিংকে যদি পেশা হিসেবে নেন,তবে আপনার আগে ব্লগিং শিখা উচিত।কোনো কিছু সম্পর্কে অভিজ্ঞ হলে সহজেই সেই কাজটি সম্পাদন করা সম্ভব হয়।ব্লগিং শিখতে হলে আপনি গুগল কিংবা ইউটিউবে সার্চ করতে পারেন।ব্লগিং সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে যাবেন।অথবা প্রতিনিয়ত আমার ব্লগ ভিজিট করতে পারেন,আমি কিভাবে ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করবেন সে সম্পর্কে লিখে থাকি।
আমাদের শেষ কথা
ব্লগিং সম্পর্কে সকল বিষয়ের ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি আমি এই লেখায়।আশা করি ব্লগিং সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন।ব্লগিং সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ব্লগিং নিয়ে আমি যেসব আর্টিকেল লিখবো,সেগুলো পড়তে পারেন।আরো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।