এসইও কি? এসইও কিভাবে শিখবেন? – SEO Tutorial in Bangla

এসইও কি

এসইও কি? বা এসইও কিভাবে শিখবো? এসইও সম্পর্কিত এধরনের প্রশ্ন যদি আপনার মনে থাকে তবে সঠিক জায়গায় এসেছে।আজকের এই পোস্ট আমি এসিও রিলেটেড সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পাশাপশি কিভাবে এসইও শিখবেন এবং এসইও শিখার উপকারিতা ও এসইও শিখে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।আজকের এই SEO নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি আপনি পুরো মনোযোগ দিয়ে পড়েন,তবে বলতে আপনি এসইও এক্সপার্ট না হলেও একজন এসইও এক্সপার্ট এর চেয়ে কম হবেন না।

অবাক হওয়ার বিষয় এই যে, সবকিছু এখন ডিজিটাল হওয়ায় এই মানুষ তাদের ব্যবসাও ডিজিটালাইজেশন করে ফেলছে।ফলে মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটারদের চাহিদা বাড়ছে।ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ হলো এসইও ( SEO ) ।এসইও এর গুরুত্ব এখন এমন হয়ে গেছে যে,এখন এসইও এক্সপার্টকে দিয়ে সামান্য এসইও সম্পর্কিত কাজ করিয়ে নিতে গেলে প্রচুর পরিমাণে টাকা দিতে হয়।তাছাড়া সবাই এখন গুগলের ফার্স্ট পেজে র‌্যাঙ্ক করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। যার ফলে তাদের ওয়েবসাইটকে এসইও অপটিমাইজ করার প্রয়োজন পড়ছে।ফলে এসইও এক্সপার্টদের চাহিদা বাড়ছে।

যে কেউ চাইলেই কিন্তু এসইও শিখতে পারে না।এসইও শিখা সময়ের ব্যাপার।শুধু সময় না,ধৈর্য এবং মনোবল লাগে এসইও শিখতে।এখানে শরীরের শক্তি না,বরং মনের জোর লাগে।আপনিও যদি একজন এসইও এক্সপার্ট হতে চান এবং এসইও সেক্টরে আপনার ক্যারিয়ার গড়তে চান কিংবা এসইও করে নিজের ওয়েবসাইট গুগলের ফার্স্ট পেজে র‌্যাঙ্ক করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই এসইও শিখতে হবে।এসইও শিখার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে এসইও সম্পর্কে আপনার অনেকাংশে ধারণা হবে বলে মনে করছি।

এসইও কি

এসইও কি?

এসইও!! এই শব্দটি নিশ্চই শুনেছেন।কখনো কি মনে প্রশ্ন জাগেনি যে,এসইও কি?এর কাজ কি?এসইও একটি ইংরেজি শব্দ। SEO এর পূর্ণরূপ হলো Search Engine Optimization । আপনি যদি আপনার কন্টেন্ট বা প্রোডাক্টকে কোনো সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাঙ্ক করানোর জন্য অপটিমাইজ করেন তখন তাকে এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলে।

আচ্ছা এসইও অপটিমাইজেশন কি সেটা তো জানলেন।তাহলে আপনাকে একটা বাস্তব উদাহরণ দিয়ে আরেকটু ভালোভাবে বুঝিয়ে দেই।মনে করুন আপনার একটি ওয়েবসাইট রয়েছে।যেখানে আপনি কম্পিউটার বিক্রি করেন।কেউ যদি গুগল বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে কম্পিউটার লিখে সার্চ দেয়,তখন যেনো আপনার ওয়েবসাইটটি প্রথম পাতায় বা সবার উপরে যেনো দেখায় এজন্য আমাদের যা যা করতে হবে সবকিছুকেই এসইও বলা হয়।

শুধু আপনি একা তো অনলাইনে কম্পিউটার বিক্রি করছেন না।আরো অনেকেই আছে যারা তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কম্পিউটার বিক্রি করছেন।তাহলে বাকিদের রেখে আপনার ওয়েবসাইটকেই কেনো গুগলের ফার্স্ট পেজে সবার উপরে দেখাবে?এর উত্তর একটাই।এসইও।আপনাকে এসইও করতে হবে যেনো গুগল বাকি সবার ওয়েবসাইট রেখে আপনার ওয়েবসাইট প্রথম পেজে সবার উপরে শো করায়।

আমাদের ওয়েবসাইটকে বা ওয়েবপেজকে এমন ভাবে অপটিমাইজ করতে হবে যেনো গুগল আরো কম্পিটিটর রেখে আমাদের ওয়েবসাইট সবার উপরে শো করায়।এখানেই এসইও এর পাওয়ার।এসইও করে আমরা সহজেই আমাদের কন্টেন্ট এবং ওয়েবসাইটকে গুগল র‌্যাঙ্ক করাতে পারি।ফার্স্ট পেজে র‌্যাঙ্ক করাতে হবে কেনো?এই প্রশ্নটি কি মনে জেগে উঠেছে?আচ্ছা,আপনি যদি গুগলে কোনো কিছু সার্চ দেন,তবে যে রেজাল্ট গুলো আসে তার মাঝে প্রথমে যে ওয়েবসাইটটি আসে সেটিতে ক্লিক করেন?নাকি সবার শেষে যেটি আসে সেটিতে ক্লিক করেন।অবশ্য প্রথম ওয়েবসাইটটিতে ক্লিক করেন।অন্যরাও এটাই করে।আর আমাদের ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর পেতে গুগলের প্রথম পাতায় র‌্যাঙ্ক করাতে হবে।

যাইহোক,এসইও কি এই বিষয়ে অনেক আলোচনা করলাম।আশা করি বুঝতে পেরেছেন।এখন আমি আলোচনা করবো এসইও কেনো শিখা দরকার এবং এর সুফল গুলো কি কি??

এসইও এর মৌলিক বিষয়

মৌলিক বিষয় বা মৌলিক প্রয়োজন কি দেয়া তো জানেন।আমাদের যেমন মৌলিক চাহিদা রয়েছে , খাদ্য,বস্ত্র,বাসস্থান,শিক্ষা,এবং চিকিৎসা ঠিক তেমনি এসইও এর কিছু মৌলিক বিষয় রয়েছে।একজন এসইও এক্সপার্ট হতে হলে আমাদের এসব মৌলিক বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।এসইও এর এসব মৌলিক বিষয় সম্পর্কে ধারণা না থাকলে আমরা এসইও শিখতে পারবো না।তাই এসব বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা প্রয়োজন।নিচে আমি এসিও এর মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করবো।

আরো পড়ুন :

১। কীওয়ার্ড রিসার্চ – Keyword Research

কীওয়ার্ড রিসার্চ কি?এই প্রশ্নটির উত্তর আছে আপনার কাছে?যদি জানা না থাকে,তবে আমি বলছি কীওয়ার্ড রিসার্চ কি? কীওয়ার্ড রিসার্চ সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আমাদের জানতে হবে কীওয়ার্ড কি? কীওয়ার্ড হলো সেসব শব্দ বা কয়েকটি শব্দ যেগুলো লিখে মানুষ গুগল বা অন্য সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে থাকে।ধরুন আপনি গুগলে আপনার প্রয়োজনে সার্চ দিলেন – What is SEO ? এই যে আপনি What is SEO লিখে গুগলে সার্চ দিলেন,এটি হলো কীওয়ার্ড।আপনি বা আমি কিংবা অন্যান্য মানুষ যেসব লিখে গুগলে সার্চ দেয়,সবগুলোই কীওয়ার্ড।

কীওয়ার্ড কি সেটা বুঝেছেন আশা করি।এখন আসি কীওয়ার্ড রিসার্চ কি সে বিষয়ে।যারা এসইও সেক্টরে কাজ করেন তাদের প্রতিনিয়ত keyword research করতে হয়।এসইও সেক্টরে কীওয়ার্ড রিসার্চ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ।তাছাড়া এই কাজটি অনেক সময় নিয়ে করতে হয় জন্য অনেকের কাছেই বিরক্তিকর কাজ এটি।কীওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য আমাদের নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে রিসার্চ করতে হবে।

  • Keyword Search Volume
  • Keyword Difficulty 
  • Keyword Quantity
  • LSI Keyword
  • KGR Keyword

কীওয়ার্ড রিসার্চ করার অন্যতম কারণ হলো আমরা যে কীওয়ার্ড নিয়ে আর্টিকেল লিখবো সেটির সার্চ ভলিউম এবং এসইও ডিফিকাল্টি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া।ইতোমধ্যে আমি আপনাদের ধারণা দিয়েছি যে কীওয়ার্ড কি।এখন হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে,সার্চ ভলিউম কি? কীওয়ার্ড এর ক্ষেত্রে সার্চ ভলিউম হয়ে থাকে।সার্চ ভলিউম হলো কোনো কীওয়ার্ড গুগলে কতবার সার্চ হয়ে থাকে সেটির পরিমাণ।মনে করুন, “SEO Tips Bangla” এই কীওয়ার্ডটি গুগলে প্রতি মাসে ১০,০০০ বার সার্চ হয়ে থাকে।তাহলে এর সার্চ ভলিউম হলো ১০,০০০ ।আশা করি সার্চ ভলিউম কি সেটা বুঝেছেন।

এখন প্রশ্ন হলো এসইও ডিফিকাল্টি বা কীওয়ার্ড ডিফিকাল্টি (keyword difficulty) কী?মনে করুন আমরা একটি কীওয়ার্ড “এসইও টিপস বাংলা” নিয়ে আর্টিকেল লিখবো,এই কীওয়ার্ড রিসার্চ করার সময় আমরা কীওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম দেখলাম ১০,০০০ । ভালো পরিমাণ সার্চ ভলিউম।কিন্তু শুধু সার্চ ভলিউম থাকলেই হবে না।আমাদের এই কীওয়ার্ড এর সার্চ ডিফিকাল্টি দেখতে হবে।সার্চ ডিফিকাল্টি বেশি হওয়া মনে এই কীওয়ার্ড নিয়ে আর্টিকেল লিখলে আমরা সহজে গুগলে র‌্যাঙ্ক করতে পারবো না।keyword difficulty যদি ৩০ এর নিচে থাকে তার মানে আমরা ভালোভাবে এসইও করলে সহজেই গুগলের ফার্স্ট পেজে র‌্যাঙ্ক করতে পারবো।কিন্তু এর বেশি হলে আমাদের জন্য র‌্যাঙ্ক করা একটু কষ্টের হবে।

শুধু এসইও করলেই নয়,আরো কিছু র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর আছে যেগুলো দিয়ে গুগলের ফার্স্ট পেজে কোনো ওয়েবসাইট র‌্যাঙ্ক করে।তবে এইটুকু মনে রাখুন যে,keyword difficulty বেশি হওয়া মানে আমাদের আগেই অনেক ভালো ওয়েবসাইট এই কীওয়ার্ড নিয়ে আর্টিকেল লিখেছে।তাই আমাদের অন্য কীওয়ার্ড নিয়ে রিসার্চ করা দরকার।

keyword research করার সময় আমাদের আরো ২ধরনের কীওয়ার্ড সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।যা আমি উপরে উল্লেখ করে দিয়েছি।এগুলো হলো

  • LSI keyword
  • KGR keyword

আমাদের মূল কীওয়ার্ড রিলেটেড সকল কীওয়ার্ড কে LSI keyword বলতে পারি। LSI keyword এর পূর্ণরূপ হলো : Latent Semantic Indexing

KGR keyword হলো সেসব কীওয়ার্ড যেগুলোর মাসিক সার্চ ভলিউম ২৫০ বা এর কম।এসব কীওয়ার্ড দিয়ে আপনি শুধুমাত্র অন পেজ এসইও করে গুগলের প্রথম পাতায় র‌্যাঙ্ক করতে পারবেন।এই KGR keyword নিয়ে পরবর্তীতে আরো আর্টিকেল লিখবো।

২। কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস – Competitor Analysis

কম্পিটিটর এনালাইসিস কি?এসইও করার সময় আমাদের কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস করা জরুরি।কারণ কম্পিটিটর এনালাইসিস না করলে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের র‌্যাঙ্ক বৃদ্ধি করতে পারবো না। কম্পিটিটর কে বা কারা?এটা জানার জন্য আমাদের এনালাইসিস করতে হবে।মনে করুন আপনি একটি কীওয়ার্ড “SEO Tips in Bangla” নিয়ে একটি আর্টিকেল লিখবেন।আপনি কিন্তু একা এই কীওয়ার্ডটি নিয়ে আর্টিকেল লিখতেছেন না বা আগে কেউ লেখেনি কিংবা কেউ ভবিষ্যতে লিখবে না এমনটা কিন্তু না।

তাই আমাদের কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস করতে হবে।আমাদের ওয়েবসাইটের কম্পিটিটররা গুগলের কততম পেজে কোন পেজে র‌্যাঙ্ক করছে , আমাদের চেয়ে ভালো পজিশনে র‌্যাঙ্ক করে থাকলে তারা র‌্যাঙ্ক করার জন্য কি কি করছে এগুলো সব এনালাইসিস করতে হবে।আমাদের চেয়ে ভালো পজিশনে যেসব ওয়েবসাইট গুগলের ফার্স্ট পেজে র‌্যাঙ্ক করছে তাদের অ্যানালাইসিস করতে হবে।তারপর সেসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।তবেই আমরা তাদের টপকিয়ে ভালো পজিশনে র‌্যাঙ্ক করতে পারবো।এসব কম্পিটিটর ওয়েবসাইটকে অ্যানালাইসিস করতে হয় নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো নিয়ে এনালাইসিস করতে হবে।

  • Content Quality
  • Content Quantity
  • Focus Keyword
  • LSI keyword
  • Backlink
  • DA/PA 

আপনার চেয়ে ভালো পজিশনে যেসব ওয়েবসাইট র‌্যাঙ্ক করছে ,তাদের র‌্যাঙ্ক করার কারণগুলো অ্যানালাইসিস করার পর আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।যেমন : আমাদের কম্পিটিটর এর যেসব ওয়েবপেজ ভালো পজিশনে র‌্যাঙ্ক করছে,তাদের Content quantity অর্থাৎ তাদের কন্টেন্ট আমাদের চেয়ে বেশি শব্দের হলে আমাদের কন্টেন্ট এর শব্দের মান বাড়াতে হবে।তাদের কনটেন্টে যদি ২০০০ শব্দ থাকে,তবে আমাদের ২০০০ এর বেশি শব্দ লিখে কন্টেন্ট আপডেট করতে হবে।

কম্পিটিটর এর DA/PA এবং Backlink অ্যানালাইসিস করে আমাদের ওয়েবসাইটকে এসইও অপটিমাইজ করতে হবে।তবেই গুগলের ভালো পজিশনে র‌্যাঙ্ক করতে পারবো।

৩। ব্যাকলিংক – Backlink

ব্যাকলিংক কি?এই ব্যাকলিংক শব্দটি নিশ্চই শুনেছেন।কি এক জিনিসটি?খায় নাকি মাথায় দেয়?Backlink না শুনে থাকলেও Link Building নিশ্চই শুনেছেন।ব্যাকলিংক হলো এসইও এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী টেকনিক।যেসব ওয়েবসাইট গুগলের প্রথম পজিশনে র‌্যাঙ্ক করে,আপনি তাদের ব্যাকলিংক চেক করে দেখবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে ব্যাকলিংক রয়েছে।অনেকেই এখন বলে যে ব্যাকলিংক কোনো কাজের না।কিন্তু তাদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।ব্যাকলিংক সঠিক ভাবে করলে,সেটা আশানুরূপ ফল দেয়।

ব্যাকলিংক তৈরি করার সময় আমাদের কিছু জিনিসের দিকে লক্ষ রাখা উচিত।আপনি ব্যাকলিংক সম্পর্কে জানতে চাইলে কয়েকটি জিনিস সামনে আসবে।যেমন :

  • Anchor Text
  • Blog Comment
  • Forum Posting
  • Guest Posting
  • Profile Backlink
  • Social Bookmarking
  • Web 2.0
  • Social SEO

ব্যাকলিংক ছাড়া সঠিক ভাবে এসইও করা সম্ভব না।একজন এসইও এক্সপার্ট কখনোই ব্যাকলিংক কে বাদ দিয়ে কিছু করতে পারবেন না।গুগলের প্রথম পেজে র‌্যাঙ্ক করতে হলে আমাদের ব্যাকলিংক তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই।ব্যাকলিংক আমাদের প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি করতে হবে।অর্থাৎ,গুগলের চোখে যেনো খারাপ না হয় ব্যাকলিংক তৈরি করতে গিয়ে।অর্থাৎ,আমরা যদি ব্যাকলিংক তৈরী করতে গিয়ে স্প্যাম করে ফেলি সেটি আমাদের র‌্যাঙ্ক বৃদ্ধি করার চেয়ে বরং পেনাল্টি খাইয়ে দিবে।

তাই কোনো ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক নেয়ার সময় লক্ষ রাখতে হবে,উক্ত ওয়েবসাইটের DA/PA যেনো ভালো থাকে।তাছাড়া স্প্যাম স্কোর হতো কম হবে তত ভালো।না বুঝে ব্যাকলিংক তৈরি করার চেয়ে না করাই ভালো।বাংলায় একটা প্রবাদ আছে , দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো।

৪। ভিজিটর অ্যানালাইসিস – Visitor Analysis

আপনাকে যদি প্রশ্ন করি,এসইও কেনো করছেন বা কেনো এসইও করবেন?কিংবা এসইও কেনো শিখবেন?কি উত্তর দিবেন আপনি?আপনার উত্তরটি অবশ্যই হবে অধিক পরিমাণে ভিজিটর পাওয়ার জন্য।আমরা ওয়েবসাইট বানাই,এসইও করি,ব্যাকলিংক বিল্ড করি ,এছাড়াও এ সংক্রান্ত আরো অনেক কাজ করি শুধুমাত্র বেশি পরিমাণে ভিজিটর পাওয়ার জন্য।ভিজিটর আমাদের ওয়েবসাইটের প্রাণ।ভিজিটর ছাড়া ওয়েবসাইট দিয়ে কোনো কাজ নেই।আমাদের ওয়েবসাইটে যদি কোনো ভিজিটর না আসে তবে সেই ওয়েবসাইট দিয়ে আমরা কি করবো!!সকল কষ্ট বৃথা যাবে।

তাই,ভিজিটর অ্যানালাইসিস করা জরুরি।ভিজিটর অ্যানালাইসিস করে আমরা আমাদের ভিজিটরদের সম্পর্কে জানতে পারবো।এক্ষেত্রে কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে।যেমন :

  • Find search engine
  • Detect keyword
  • Bounce rate
  • Visitor time spend

এখানে Find search engine বলতে বুঝাচ্ছে যে , আমাদের ওয়েবসাইটে যেসব ভিজিটর আসছে,তারা কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে আসছে।এটা জানার জন্য আমাদের ভিজিটর এনালাইসিস করতে হবে।

Detect keyword বলতে বুঝাচ্ছে যে , কোন কোন কীওয়ার্ড এর মাধ্যমে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসছে।এগুলো রিসার্চ করা জরুরি।

Bounce rate হলো আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসার পর,তারা আমাদের ওয়েবসাইটে কত সময় ব্যয় করছে।তারা আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার পর অন্য কোনো পেজে ভিজিট করছে কিনা,নাকি সাথে সাথে লিভ নিচ্ছে।এই সবগুলো নিয়ে বাউন্স রেট কাউন্ট করা হয়।

এসইও কেনো করবেন?

এসইও কি এবং এসইও করতে কি কি করতে হয় এবং এসইও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আমি ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি।কিন্তু কেউ যদি আপনাকে প্রশ্ন করে , এসইও কেনো করবেন বা এসইও কেনো শিখবেন? তবে কি উত্তর দিবেন?এইটা আমি একটু আগেও আলোচনা করেছি।এসইও শিখা বা এসইও শিখে টা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রয়োগ করার একটাই কারণ।সেটা হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন থেকে বেশি পরিমাণ ট্রাফিক আমাদের ওয়েবসাইটে ড্রাইভ করা।অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনে প্রথম পজিশনে র‌্যাঙ্ক করে অনেক বেশি পরিমাণে ভিজিটর আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে আসা।ভিজিটর যত বেশি তত বেশি ইনকাম।

ইনকাম এর কথা যেহুতু বললাম,তাই এটাও বলা লাগে যে আমরা কিন্তু এসব এমনি এমনি করছি না।এসইও কিংবা ওয়েবসাইট সবকিছুই কিন্তু আমরা ইনকাম করার উদ্দেশ্যেই করছি।আমাদের ব্যবসায় থাকলে সেটিকে সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য হলেও আমাদের এসইও করতে হবে।এক্ষেত্রেও কিন্তু আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো ইনকাম করা।আবার আমাদের যদি কোনো ওয়েবসাইট থাকে,সেটি র‌্যাঙ্ক করার উদ্দেশ্যও হলো ইনকাম করা। গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে বা অন্য অ্যাড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইনকাম করতে চাইলে আমাদের ব্লগে অনেক ভিজিটর দরকার।যা পাওয়ার জন্য অন্যতম উপায় হলো এসইও করা।তাই আমাদের এসইও করার অন্যতম কারণ বলে যায় ইনকাম করা বা বেশি পরিমানে ভিজিটর আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে আসা।

একই টপিক নিয়ে অনেকেই লেখালেখি করে।গুগল কাউকে প্রথম পেজে র‌্যাঙ্ক করায়।আবার কাউকে দ্বিতীয় পেজে।প্রথম পেজেই আবার দেখা যায়,কেউ প্রথম পজিশনে,তো কেউ দ্বিতীয় না তৃতীয় পজিশনে।এই সবকিছু কিন্তু নির্ধারণ করা হয় এসইও এর উপর ভিত্তি করে।যাদের ওয়েবসাইট এসইও অপটিমাইজ করা,কন্টেন্ট এসইও ফ্রেন্ডলী তাদের ওয়েবসাইট প্রথম পজিশনে র‌্যাঙ্ক করে।তাই আমাদের ওয়েবসাইট গুগলের প্রথম পেজে র‌্যাঙ্ক করাতে চাইলে এসইও করতে হবে।

এসইও করে সার্চ ইঞ্জিনকে বুঝাতে হবে যে,আমাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইট কি সম্পর্কে।আমাদের ওয়েবসাইটের নিশ কি।তবেই সার্চ ইঞ্জিন আমাদের কন্টেন্ট র‌্যাঙ্ক করাবে।ধরুন আমরা একটা টিউটোরিয়াল ওয়েবসাইট বানালাম।সেখানে এসইও টিপস সম্পর্কটি সকল টিউটোরিয়াল দিলাম।কিন্তু ভিজিটর আসবে কিভাবে?এসইও করতে হবে ভিজিটর আনার জন্য।এজন্য আমাদের ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট করতে হবে।শুধু এটুকু করলেই হয়ে যাবে?না।আমাদের ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে র‌্যাঙ্ক করাতে হবে। সার্চ ইঞ্জিনে কেউ যদি এসিও টিপস লিখে সার্চ দেয়,তখন যেনো সার্চ ইঞ্জিন আমাদের ওয়েবসাইট প্রথম পজিশনে শো করায়,এজন্য এসইও অপটিমাইজ করতে হবে।তবেই সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারবে আমাদের ওয়েবসাইট কি সম্পর্কে এবং কোন কোন ভিজিটরদের সামনে আমাদের ওয়েবসাইট শো করাতে হবে।

সার্চ ইঞ্জিন কি?

সার্চ ইঞ্জিন হলো এক ধরনের ওয়েবসাইট যেখানে মানুষ তাদের প্রয়োজনে কোনো কিছু সার্চ দেয়।যেমন : Google, Bing, Yahoo, Duckduckgo ইত্যাদি।সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে আমি পরবর্তীতে আরো বিস্তর আলোচনা করবো।

এসইও কিভাবে কাজ করে?

এসইও কি এবং কেনো এসইও করতে হবে এসব বিষয়ে জানলাম।কিন্তু এসিও কিভাবে কাজ করে এটি যদি জানা না থাকে,তবে কেউ প্রশ্ন করলেও তো আমরা উত্তর দিতে পারবো না।একজন এসইও এক্সপার্ট হতে হলে আমাদের এসব বিষয়ে সঠিক ধারণা রাখতে হবে।নয়তো এসইও শিখেও শেখা হবে না।এসইও করা মানে এই না যে আমাদের ওয়েবসাইট বা আমাদের কন্টেন্ট সাথে সাথে গুগলে বা অন্য সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাঙ্ক করবে।এসইও করার মাধ্যমে আমরা সার্চ ইঞ্জিন এর ক্রলার দের এতে বুঝাচ্ছি যে আমদের ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাঙ্ক করার সক্ষমতা রাখে।আমরা সার্চ ইঞ্জিনকে পজিটিভ সিগন্যাল দিচ্ছি আমাদের কন্টেন্ট সম্পর্কে।

ধরুন আমরা একটি কন্টেন্ট লিখলাম , এসইও শিখে টাকা ইনকাম নিয়ে।কেউ যদি গুগলে এটা লিখে সার্চ দেয় তবে কিন্তু আমাদের ওয়েবসাইট একদিনেই র‌্যাঙ্ক করবে না।সঠিক ভাবে এসইও করতে হবে।যেনো সার্চ ইঞ্জিনের রোবট বুঝতে পারে যে আমাদের কন্টেন্ট র‌্যাঙ্ক করানো উচিত।আমাদের কন্টেন্টে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে যা অন্যরা সার্চ করছে।তবেই সার্চ ইঞ্জিনে আমাদের কন্টেন্ট র‌্যাঙ্ক করবে।তবে এসইও করার ক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখা জরুরী যে,এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।একদিনেই সার্চ পেজের প্রথমে র‌্যাঙ্ক করা সম্ভব নয়। র‌্যাঙ্ক করলেও তা ধরে রাখার জন্য প্রতিনিয়ত কন্টেন্ট আপডেট করতে হবে।

এসইও কত প্রকার?

এসইও সম্পর্কে অনেক আলোচনা করেছি।কিন্তু আপনি কি জানেন এসইও কত প্রকার? SEO কত প্রকার এটা যদি না জানেন তবে তো এসইও সম্পর্ককে অনেক কিছু জানা বাকি থেকে গেলো।চলুন দেখে আসা যাক এসইও কত প্রকার।

  1. হোয়াইট হ্যাট এসইও
  2. গ্রে হ্যাট এসইও
  3. ব্ল্যাক হ্যাট এসইও

এসইও এর এই ভাগ গুলো নিয়ে আমি পরবর্তীতে আরো বিস্তারিত লিখবো।

কীভাবে এসইও করতে হয়?

এসইও সাধারণত দুই ভাবে করা যায়।যারা এসিও এক্সপার্ট তারা এই দুই নিয়মেই এসইও করে থাকেন।নিচে আমি এই দুইটি নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করছি।

  1. অর্গানিক এসইও
  2. পেইড এসইও

উপরে আমি ২ ধরনের এসইও এর কথা উল্লেখ করেছি।এসইও করার জন্য এই দুইটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।এই দুইটি পদ্ধতি অবলম্বন করলে সার্চ ইঞ্জিন থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর নিয়ে আসা সম্ভব।নিচে আমি এই দুইটি পদ্ধতি সম্পর্কে আরও আলোচনা করছি।

অর্গানিক এসইও

যখন অর্গানিক ভাবে,কোনো প্রকার টাকা খরচ না করে আপনি সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসবেন,তখন তাকে অর্গানিক এসইও বলা হয়।অর্গানিক এসইও ৩ধরনের। যথা :

  1. অন পেজ এসইও
  2. অফ পেজ এসইও
  3. টেকনিক্যাল এসইও

অন পেজ এসইও – On Page SEO

যখন আমরা এসইও সম্পর্কিত সকল কাজ আমাদের ওয়েবসাইটের ভিতর এবং আমাদের কন্টেন্টের ভিতর করে থাকি, তখন তাকে অন পেজ এসইও বলে।অন পেজ এসইও সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাঙ্ক করার জন্য প্রত্যক্ষ ভাবে ভূমিকা রাখে।তাই এসইও করার সময় অন পেজ এসইও এর দিকে ভালোভাবে লক্ষ রাখা উচিত।

অফ পেজ এসইও – Off Page SEO

আমরা যখন এসইও এর কাজগুলো,যেমন : ব্যাকলিংক বানানো ইত্যাদি কাজগুলো ওয়েবসাইটের বাইরে করে থাকি,তখন তাকে অফ পেজ এসইও বলে।অফ পেজ এসইও একটি ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।আর তাই গুগলের বা অন্য সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পজিশনে র‌্যাঙ্ক করে।তাই অফ পেজ এসইও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।এসইও এর ক্ষেত্রে অফ পেজ এসইও বাদ দিয়ে এসইও সম্পূর্ণ করা সম্ভব নয়।

টেকনিক্যাল এসইও – Technical SEO

শুধু অন পেজ এসইও বা অফ পেজ এসইও নয়।টেকনিক্যাল এসইও সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাঙ্ক করাতে ভূমিকা রাখে।ধরুন,আপনার ওয়েবসাইট গুগলের প্রথম পেজে র‌্যাঙ্ক করেছে,ভিজিটর যদি আপনার ওয়েবসাইটে ক্লিক করে এবং আপনার ওয়েবসাইট লোড হতে অধিক সময় নেয়।তবে সেটা আপনার র‌্যাঙ্ক বৃদ্ধি না করে বরং আরো কমিয়ে দিবে।তাই on page seo , off page seo এর পাশাপশি technical seo এর দিকে লক্ষ রাখতে হবে।

পেইড এসইও

আপনি যদি অর্গানিক ভাবে এসইও না করে টাকা খরচ করে এসইও করে গুগলের প্রথম পেজে র‌্যাঙ্ক করতে চান,তবে আপনাকে নির্দিষ্ট কীওয়ার্ড দিয়ে টাকার বিনিময়ে গুগলের থেকে ক্যাম্পেইন রান করাতে হবে।এতে করে আপনার দেয়া কীওয়ার্ড দিয়ে কেউ সার্চ দিলে গুগল আপনার ওয়েবসাইট সবার উপরে শো করাবে।

আমাদের শেষ কথা

এসইও ছোট কোনো বিষয় নয়।একটি আর্টিকেলে এসইও সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেয়া সম্ভব নয়।তাই আমি আর্টিকেলটি বড় না করে একে কয়েকটি ভাগে ভাগ করার চিন্তা করেছি।এই পর্বে আমি এসইও কি এবং এসইও কিভাবে করতে হয় , এসইও এর প্রকারভেদ ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করেছি।আশা করছি পরবর্তী পোস্টগুলোতে অন পেজ এসইও, অফ পেজ এসইও, টেকনিক্যাল এসইও এবং এসইও করে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতি , এসইও করতে যেসব টুলস লাগে সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

এসইও হলো একটি মহাসাগর।সেখানে আপনি যত গভীরে ডুব দিবেন, তত নতুন কিছু আবিস্কার করবেন।আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে পারেন কমেন্ট বক্সে।প্রতিনিয়ত আমাদের TechyBN ওয়েবসাইট ভিজিট করুন টেকনোলজি সম্পর্কিত আর্টিকেল পেতে।

About Farhan

I'm Farhan. A writer who blogs about technology trends. Join me on a journey of discovery and innovation, from understanding difficult concepts to discovering hidden treasures.

View all posts by Farhan →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *