গুগল এডসেন্স কি?গুগল এডসেন্স থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায়?গুগল অ্যাডসেন্স কিভাবে কাজ করে?কিভাবে গুগল এডসেন্স পাওয়া যায়? আপনার মনে যদি এডসেন্স সংক্রান্ত এসব প্রশ্ন থাকে,তবে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই পোস্টে।আজকের এই পোস্টে আমি গুগল এডসেন্স এর আদ্যোপান্ত সম্পর্কে আলোচনা করবো।গুগল এডসেন্স কি জানতে এবং গুগল এডসেন্স থেকে মাসে হাজার ডলার ইনকাম করতে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
Google Adsense কি?Google Adsense হলো একটি বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান।এটি গুগলের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।গুগলের অন্যান্য সেবার মত এডসেন্স আরেকটি সেবা।গুগল এডসেন্সের সাহায্যে অনেকেই তাদের প্রতিষ্ঠান বা পণ্য সম্পর্কে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে।যেমন : আমরা ইউটিউব কিংবা যেকোনো ওয়েবসাইটে দেখি বিজ্ঞাপন দেখায়।এগুলোর অধিকাংশ গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন।গুগল এডসেন্স দিয়ে নিজেদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দেখাতে চাইলে গুগলকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হয়।
আবার একই ভাবে,কেউ যদি তার ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে গুগল এডসেন্সের বিজ্ঞাপন দেখাতে চায়,তবে বিজ্ঞাপন দেখানোর বিনিময়ে এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে পারবে।যারা নিজেদের ওয়েবসাইটে বা ইউটিউব চ্যানেলে এডসেন্সের এডস দেখিয়ে ইনকাম করে,তাদের পাবলিশার বলা হয়।গুগল বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য যেমন টাকা নেয়,ঠিক তেমনি সেই টাকার কিছু অংশ পাবলিশারদের দিয়ে থাকে।
গুগল এডসেন্স কি?
গুগল এডসেন্স হলো একটি Ad Network । Google Adsense গুগলের একটি প্রোডাক্ট বা সেবা।গুগল হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বা জায়ান্ট কোম্পানি।সবাই কোনো না কোনো ভাবে গুগলের প্রোডাক্ট ব্যবহার করে।যেমন : আমরা প্রায় সবাই গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করি।আর গুগলের অ্যাড নেটওয়ার্ক সবথেকে বড় অ্যাড নেটওয়ার্ক।যেখানে সবাই তাদের ব্যবসা প্রসার করার জন্য বিজ্ঞাপন দেখানোর বিনিময়ে গুগলকে টাকা দিয়ে থাকে।আর গুগল সেই বিজ্ঞাপনগুলো পাবলিশার দের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে দেখিয়ে থাকে পাবলিশারদের কিছু টাকা দেয়ার বিনিময়ে।
বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রথম পছন্দ যেমন গুগল এডসেন্স , ঠিক তেমনি পাবলিশার দের প্রথম পছন্দ গুগল এডসেন্স।গুগলের সেবা মানে শতভাগ বিশ্বস্ত।তাই সবাই চোখ বন্ধ করে গুগল এডসেন্স এর উপরে ভরসা করে থাকে , এবং এডসেন্স এপ্রুভাল নেয়ার জন্য এত কিছু করে।আপনিও হয়তো গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করার জন্য আমার এই আর্টিকেল পড়ছেন।
আমরা যখন গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলে তাতে আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য দেই,এবং আমাদের ওয়েবসাইটে এডসেন্স এপ্রুভাল নেয়ার জন্য ওয়েবসাইট যুক্ত করে এপ্লাই করি।তখন গুগল আমাদের ওয়েবসাইট রিভিউ করে দেখে।অতঃপর সব কিছু ঠিক থাকলে,তাদের নীতিমালা মানলে এপ্রুভাল দিয়ে দেয়।এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার পর আমাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য এবং বিজ্ঞাপনে ক্লিক পড়ার উপরে নির্ভর করে গুগল এডসেন্স আমাদের একাউন্টে টাকা দিয়ে থাকে।যা আমরা পরবর্তীতে ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত করে উত্তোলন করতে পারি।
গুগল এডসেন্স ই কেনো?
এত শত অ্যাড নেটওয়ার্ক থাকতে গুগল এডসেন্স কেনো?সবাই গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল নেয়ার জন্য এত কষ্ট করে কেনো? এত সময় নষ্ট করে গুগল এডসেন্সের পিছে পরে থেকে কেনো?অ্যাড নেটওয়ার্ক হিসেবে বিজ্ঞাপনদাতাদের প্রথম পছন্দ গুগল এডসেন্স।গুগল অ্যাডসেন্স বিশ্বস্ত একটি অ্যাড নেটওয়ার্ক।এখানে পেমেন্ট পেতে কোনো ধরনের সমস্যা হয় না।অন্যান্য অ্যাড নেটওয়ার্ক পেমেন্ট দিতে অনেক সমস্যা করে।
তাছাড়া গুগল এডসেন্স এর অ্যাডস অনেক রেসপন্সিভ হয় যা অন্যান্য অ্যাড নেটওয়ার্ক এর ক্ষেত্রে দেখা যায় না।আমরা চাইলে গুগলের অ্যাড lazy-load করে ব্যবহার করতে পারি,কিন্তু অন্যান্য যেসব অ্যাড নেটওয়ার্ক আছে,যেমন – Ezoic,A-Ads,Adsterra এসব অ্যাড নেটওয়ার্ক এর অ্যাড lazy-load ব্যবহার করা যায় না।ফলে পেজ স্পীড অনেক কমে যায়।আর পেজ স্পীড কমে যাওয়ার ফলে এসইও এর ক্ষেত্রে অনেক বিরূপ প্রভাব পরে।পেজ স্পীড টেকনিক্যাল এসইও এর অন্তর্গত।তাই পেজ স্পীড এর দিকে লক্ষ রাখা উচিত।
অন্যভাবে বললে দেখা যায়,গুগল অ্যাডসেন্স থেকে অনেক বেশি পরিমাণে সিপিসি দেয়।যা অন্যান্য অ্যাড নেটওয়ার্কে দেখা যায় না।
গুগল এডসেন্সের কাজ কি?
আগেই বলেছি যে গুগল এডসেন্স হলো একটি অ্যাড নেটওয়ার্ক।যারা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে থাকে।এর বিনিময়ে যে পরিমাণ টাকা নিয়ে থাকে তার ৩২% নিজের কাছে রেখে দেয় এবং বাকি ৬৮% পাবলিশারদের দিয়ে থাকে তাদের ওয়েবসাইটে / ইউটিউব চ্যানেলে অ্যাডস দেখানোর বিনিময়ে।গুগল প্রথমে বিজ্ঞাপন দাতাদের থেকে বিজ্ঞাপন দেখানোর বিনিময়ে টাকা নেয়।তারপর পাবলিশার দের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখায়।সেই বিজ্ঞাপনে ভিজিটররা ক্লিক করে।সেই ক্লিকের উপর নির্ভর করে গুগল এডসেন্স পাবলিশার দের টাকা দিয়ে থাকে।
গুগল এডসেন্স কিভাবে টাকা দেয়?
আপনি যদি গুগল এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তবে আপনার ওয়েবসাইট বা অ্যাডসেন্স থাকা লাগবে।তাহলে আপনি একজন পাবলিশার হিসেবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।গুগল অ্যাডসেন্স আপনাকে দুই ভাবে টাকা দিবে।
- CPC = Cost per click
- RPM = Revenue per thousand impression
CPC কী?
গুগল এডসেন্স যে অ্যাডস দেখায়,সেই অ্যাডস এ যখন ভিজিটররা ক্লিক করে,সেই ক্লিক এর বিনিময়ে এডসেন্স যে পরিমাণ $ দিয়ে থাকে,সেটাই CPC (সিপিসি) বা Cost per click ।
RPM কী?
CPC তে অ্যাডস এ উপর ক্লিক এর উপর ভিত্তি করে এডসেন্স $ দিয়ে থাকে।কিন্তু RPM একটু ভিন্ন। RPM হলো এডসেন্স অ্যাডস এ প্রতি ১০০০ ভিউ এর জন্য যে $ দেয় সেটা।
এডসেন্স কখন পেমেন্ট করে?
এডসেন্স থেকে এপ্রুভাল পাওয়ার পর আপনি যখন এডসেন্স এর অ্যাডস আপনার ওয়েবসাইটে সেট করবেন,এবং এডসেন্স cpc ও rpm এর উপর ভিত্তি করে আপনাকে যে $ দিবে আপনার একাউন্টে, তা $100 হলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে উত্তোলন করে নিতে পারবেন।
এডসেন্স কখন চিঠি পাঠায়?
এডসেন্স একাউন্টে যখন $10 হবে তখন আপনার অ্যাড্রেস ভেরিফাই করার জন্য গুগল থেকে ডাকযোগে একটি চিঠি পাঠাবে।সেই চিঠির ভিতর একটি গোপন পিন নাম্বার থাকে।যা দিয়ে অ্যাড্রেস ভেরিফাই করা হয়।
এডসেন্স এর চিঠি আসতে কতদিন সময় লাগে?
এডসেন্স এর চিঠি আসতে সাধারণত ২ সপ্তাহ লাগে,কিন্তু ১ মাসের ভিতরেই চিঠি এসে যায়।এজন্য আপনাকে আপনার পোস্ট অফিসের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে।তাহলে চিঠি আসলে সহজেই সেটি নিতে পারবেন।
এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করবো কীভাবে?
এডসেন্স থেকে ইনকাম করার জন্য আমাদের প্রথমেই একটি এডসেন্স অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।এজন্য আমাদের বয়স ১৮ এর বেশি হতে হবে।কারণ এডসেন্স অ্যাকাউন্টে আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য নিয়ে থাকে।তাই তাদের শর্ত অনুযায়ী অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর মালিক হতে হলে অবশ্যই ১৮ বছর বয়স বা এর বেশি হতে হবে।এছাড়া এডসেন্স অ্যাকাউন্ট একজনের জন্য মাত্র একটি।তাই একের অধিক এডসেন্স একাউন্ট থাকলে দ্বিতীয় এডসেন্স অ্যাকাউন্টে গুগলে এপ্রুভাল দেয় না।
কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায়?
গুগল এডসেন্স থেকে আপনি ২ ভাবে টাকা আয় করতে পারবেন। একটি হলো ব্লগ বা ওয়েবসাইট এবং অন্যটি হলো ইউটিউব চ্যানেল। তবে আপনার যদি কোনো এন্ড্রয়েড বা আইওএস অ্যাপ থাকে তবে আপনি অ্যাডমব থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অ্যাডমব নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করবো।
ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে আয় করার উপায়
আপনার যদি লেখালেখি করার অভ্যাস থাকে বা লেখালেখি করে অনলাইনে আপনার একটি সুন্দর ক্যারিয়ার গড়তে চান,তবে ব্লগিং বেছে নিতে পারেন।অনেক ব্লগার আছে,যারা শুধু মাত্র ব্লগিং করেই প্রতিমাসে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করছেন।
ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়
এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করার আরেকটি উপায় হলো ইউটিউব।ইউটিউব থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।এতদিন তো ইউটিউবে ভিডিও দেখে এসেছেন।কিন্তু আপনি কি জানতেন যে,ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা যায়।ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনাকে ভিডিও বানাতে হবে।ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে।যেখানে ভিডিও আপলোড করে আপনি সেই ভিডিওতে এডসেন্সের অ্যাডস দেখিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।
ইউটিউব চ্যানেলে এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার জন্য আপনাকে ইউটিউবের কমিউনিটি গাইডলাইন এবং প্রাইভেসি পলিসি মেনে ভিডিও আপলোড করতে হবে। যখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১২ মাসের মধ্যে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম সম্পন্ন হয়ে যাবে, তখন আপনি এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এডসেন্স দিয়ে ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার উপায়
আমরা ওয়েবসাইট দিয়ে এডসেন্স ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারি।এজন্য আমাদের ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ ইউনিক কয়েকটি আর্টিকেল থাকতে হবে। কোনো প্রকার কপিরাইট ইমেজ ব্যবহার করা যাবে না।এছাড়া আমাদের ওয়েবসাইটে কিছু দরকারী পেজ থাকতে হবে। যথা : About us , Contact us , Terms of Use , Disclaimer ।এছাড়াও আপনার ওয়েবসাইটে কিছু পরিমাণ ভিজিটর থাকতে হবে।অনেকেই বলে কোনো ভিজিটর না থাকলেও এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া যায়।তবে ভিজিটর ছাড়া এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে অ্যাড লিমিট খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আর আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর না থাকলে গুগল অ্যাড দেখাবে কাকে?ভিজিটর না থাকলে তো ইনকাম ও হবে না।এডসেন্স থেকে যেহুতু আমাদের ইনকাম করার উদ্দেশ্য,তাই ভিজিটর তো লাগবেই।
ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়
এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া এখন অনেক কঠিন হয়ে গেছে।তবে আমাদের ব্লগে বা ওয়েবসাইটে যদি ইউনিক কন্টেন্ট থাকে,তবে গুগল অবশ্যই এডসেন্স এপ্রুভাল দিবে।Blogger হলো গুগলের ব্লগিং করার একটি প্লাটফর্ম।যেখানে যে কেউ একটি গুগল অ্যাকাউন্ট থাকলে ফ্রীতে ওয়েবসাইট খুলে ব্লগিং শুরু করতে পারে।তবে এখানে মজার ব্যাপার হলো আরেকটি যে আপনি চাইলে ব্লগারের সাবডোমেইন .blogspot দিয়েও এডসেন্স এপ্রুভাল নিতে পারবেন।
অর্থাৎ আমাদের ডোমেইন কেনার জন্য টাকা খরচ না করলেও এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া সম্ভব।কিন্তু এজন্য আপনাকে অবশ্যই গুগল এডসেন্স এর পলিসি মানতে হবে।পলিসির বাইরে কিছু করলে গুগল কখনোই এডসেন্স এপ্রুভাল দিবে না।যেমন : কেউ যদি তার ওয়েবসাইটে কপি কন্টেন্ট দেয়,তবে কিন্তু সে এডসেন্স এপ্রুভাল পাবে না।
গুগলের পলিসি এখন অনেক স্ট্রং হয়ে গেছে।তাই আমাদের অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার আগে এডসেন্স এর শর্তাবলী অবশ্যই পড়তে হবে এবং মেনে চলতে হবে।
ওয়েবসাইটে এডসেন্স সেট করার উপায়
সবকিছু যদি ঠিক ভাবে করেন,তবে এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করার কয়েকদিনের মাঝেই গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।তবে এডসেন্স এ আবেদন করার আগে অ্যাড কোড আমাদের ওয়েবসাইটের থিমের <head></head> ট্যাগ এর ভিতর বসাতে হবে।এপ্রুভাল পাওয়ার পর আমরা অটো অ্যাড সেট করে দিলে গুগল নিজে থেকে এড দেখাবে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন জায়গায়।কিন্তু ম্যানুয়ালি অ্যাড কোড সেট করতে আমাদের অ্যাডস সেটআপ করতে হবে।
থিমের বিভিন্ন জায়গায় এডসেন্স এর অ্যাডস কোড যুক্ত করলে সেসব জায়গায় এডসেন্স এর অ্যাডস শো করবে।মনে রাখবেন,এডস সেটআপ এর উপর ভিত্তি করে ইনকাম বাড়ে বা কমে।তাই অ্যাডস সেটআপ করার সময় ভালো ভাবে অ্যাডস সেটআপ করতে হবে।অ্যাডস এ বেশি পরিমাণ ক্লিক পেতে আমাদের সঠিক জায়গায় অ্যাডস বসাতে হবে।কিন্তু অ্যাডস এমন ভাবে মডিফাই করা যাবে না,যেনো ভিজিটর এর সমস্যা হয়।তাহলে অ্যাডসেন্স একাউন্ট ডিসেবল করে দিতে পারে।
Blogger দিয়ে অ্যাডস কোড বসাতে প্রথমেই যাবেন ড্যাশবোর্ড এ।তারপর Layout এ গিয়ে থিমের ডিফল্ট ভাবে সেট করা জায়গায় অ্যাডস কোড বসিয়ে দিবেন।তাহলে সেসব জায়গায় অ্যাডস শো করবে।তবে ওয়ার্ডপ্রেসের ক্ষেত্রে Ads insert plugin ব্যবহার করতে পারেন অ্যাডস কোড বসানোর জন্য।
অবশ্যই মানতে হবে এমন কয়েকটি গুগল এডসেন্স পলিসি নিচে তুলে ধরলাম।এডসেন্স এপ্রুভাল পেতে অবশ্যই এগুলো মেনে চলতে হবে।
গুগল এডসেন্স পলিসি
গুগল এডসেন্স কি এবং গুগল এডসেন্স থেকে কিভাবে আয় করা যায় এসব নিয়ে এতক্ষণ যাবত আলোচনা করলাম।এতদূর পড়ে এসেছেন মানে,আপনি এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করতে আগ্রহী।তবে আপনাকে এডসেন্স এর পলিসি বা শর্তগুলো মেনে চলতে হবে যদি আপনার ওয়েবসাইটে এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে একজন পাবলিশার হিসেবে মাসে হাজার ডলার ইনকাম করতে চান।
এডাল্ট কন্টেন্ট (১৮+)
১৮+ কন্টেন্ট না এডাল্ট কন্টেন্টের চাহিদা অনেক বেশি।যে কেউ চাইলে এই ধরনের কন্টেন্ট দিয়ে সহজেই ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করাতে পারবে।কিন্তু এডাল্ট কন্টেন্ট দিয়ে আপনি কখনোই এডসেন্স এপ্রুভাল পাবেন না।কারণ,গুগলের পলিসির বাইরে এসব কন্টেন্ট।তাই,আপনি যদি এডাল্ট কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করেন,তবে গুগল এডসেন্স এর জন্য চেষ্টা না করাই ভালো।তবে কোনো ভাবে যদি এপ্রুভাল পেয়েও যান,শীঘ্রই এডসেন্স ডিসেবল হয় যাবে।
কপি কন্টেন্ট
কপি কন্টেন্ট দিয়ে অনেকেই এডসেন্স এপ্রুভাল নেয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু এটি বৃথা চেষ্টা।কারণ,কপি কন্টেন্ট গুগলের পলিসির বাইরে।কপি কন্টেন্ট দিয়ে যেমন আপনি গুগলে র্যাঙ্ক করতে পারবেন না,ঠিক তেমনি এডসেন্স এপ্রুভাল পাবেন না।তাই কপি কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করে সময় নষ্ট না করাই ভালো।টিকে থাকতে হবে ইউনিক কন্টেন্ট লিখার চেষ্টা করুন।কিছুদিন পূর্বে গুগলের হেল্পফুল কন্টেন্ট আপডেটে অনেক ওয়েবসাইট ধাক্কা খেয়েছে।যাদের ওয়েবসাইটে কপি কন্টেন্ট ছিলো তাদের ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক হারিয়েছে।
গুগল কপি কন্টেন্ট সমর্থন করে না।আর অনেকেই গুগলকে বোকা বানানোর লক্ষে কপি কন্টেন্ট দিয়ে ওয়েবসাইট বানিয়ে থাকে।কিন্তু গুগলের নখদর্পণে থেকে গুগলকে বোকা বানানো কি সম্ভব?
হ্যাকিং বা ক্রাকিং কন্টেন্ট
এই ধরনের কন্টেন্ট দিয়ে গুগল কখনোই মনিটাইজেশন দিবে না।ওয়েবসাইটে কোনো ধরনের হ্যাকিং,ফিশিং,বা ক্রাকিং সম্পর্কিত কন্টেন্ট থাকলে,গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল দিবে না।তাই এসব কন্টেন্ট ওয়েবসাইটে থাকলে তা রিমুভ করে দিন।এডসেন্স পাওয়ার পর এসব নিয়ে কাজ করলে এডসেন্স ডিসেবল হওয়ার চান্স থাকে অনেক বেশি।
গাইডলাইন
গুগল এডসেন্স থেকে একজন পাবলিশার হিসেবে টাকা ইনকাম করতে চাইলে অবশ্যই গুগলের গাইডলাইন মেনে চলতে হবে।গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করার আগে অবশ্যই এডসেন্স এর নীতিমালা গুলো পড়ে নিবেন।তারপর কোনো সমস্যা থাকলে সেগুলো আগে ফিক্স করে নিবেন।তাহলে সহজেই এডসেন্স এপ্রুভাল পাবেন।
গুগল এডসেন্স থেকে কত টাকা আয় করা যায়?
আপনি যদি ব্লগিংয়ে নতুন হয়ে থাকেন,কিংবা এডসেন্স সম্পর্কে তেমন জানেন না তবে আপনার মনে এই প্রশ্নটি জাগতেই পারে।অথবা,আপনি ভাবতে পারেন যে,যারা ব্লগিং করে তারা মাসে কত টাকা ইনকাম করে? আসলে আপনি যদি সঠিক ভাবে নিয়ম মেনে কাজ করেন,তবে এডসেন্স থেকে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন।কিন্তু এডসেন্স থেকে ইনকাম করার জন্য আমাদের দরকার ভিজিটর।
ওয়েবসাইটে যদি ভিজিটর না আসে,তবে কোনো টাকা ইনকাম হবে না।আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর থাকতে হবে অনেক। পাশাপাশি অ্যাডস এ ক্লিক পড়তে হবে।এডসেন্স এর হাই সিপিসি কীওয়ার্ড এ ক্লিক প্রতি $500 অব্দি দিয়ে থাকে।এজন্য আপনাকে হাই সিপিসি ইংলিশ কীওয়ার্ড নিয়ে লেখালেখি করতে হবে।কিন্তু বাংলা কনটেন্টে সিপিসি অনেক কম থাকে।তাই বাংলায় ব্লগিং করতে চাইলে ধৈর্য ধরে ব্লগিং করতে হবে।তবেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব।বাংলায় ব্লগিং করতে এবং ব্লগিং এ সফলতা অর্জন করতে আমার ওয়েবসাইটের ব্লগিং সম্পর্কিত অন্যান্য আর্টিকেল গুলো পড়তে পারেন।
আরো পড়ুন :
বাংলায় ব্লগিং করে ইনকাম করতে চাইলে আপনাকে ভালোভাবে এসইও করতে হবে।আপনার ওয়েবসাইটে গুগলে র্যাঙ্ক করলে সার্চ ইঞ্জিন থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর আসবে ওয়েবসাইটে।তাহলে আপনি সহজেই মাসে অনেক ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন।গুগল এডসেন্স এখন সোনার হরিন হয়ে যাচ্ছে।তাই একবার ধরতে পারলে, অনলাইনে একটি ভালো ক্যারিয়ার বানাতে পারবেন।একজন সফল ব্লগার হতে পারলে টাকা এবং সুনাম উভয় পাবেন।তাই কষ্ট করে ব্লগিংয়ে লেগে থাকা উচিত।তবেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব।দিন শেষে যারা পরিশ্রমী,তারাই সফল।শর্টকাট না খুঁজে,সঠিক পথে হাঁটুন।
আরো পড়ুন :
আমাদের শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আমি এডসেন্স কি এবং কিভাবে এডসেন্স থেকে ইনকাম করা যায় এসব বিষয়ে বিস্তর আলোচনা করেছি।আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন,তবে আশা করছি আপনার মনে এডসেন্স নিয়ে যেসব প্রশ্ন ছিলো,সব দূর হয়েছে।তবুও যদি কোনো কিছু মিস করে থাকি,কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করতে ভুলবেন না।এডসেন্স নিয়ে কাজ করে আপনিও এখন থেকে মাসে হাজার ডলার ইনকাম করা শুরু করে দিক আজকে থেকেই।